সরকারের তথ্যমতে, দেশে বার্ষিক ডিম উৎপাদন হয় ২ হাজার ৩৭৪ কোটি ৯৭ লাখ পিস। তবে চাহিদা ১ হাজার ৮০৯ কোটি ৬০ লাখ পিস।। এর মানে চাহিদার তুলনায় ৩০ শতাংশ অবশিষ্ট রয়েছে। তবে উৎপাদন সংকটের কারণ দেখিয়ে প্রতিদিনই ডিমের দাম বাড়াচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। ডিম এখন খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়।
তেজাগান ডিম ব্যবসায়ী সমিতি অবশ্য ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে। এ বিষয়ে সংস্থার প্রধান আমানুল্লাহ বণিক বলেন, তেজগাঁও থেকে দিনে মাত্র ১৪-১৫ লাখ ডিম সরবরাহ করা হয়। কাজেই এখান থেকে দাম নিয়ন্ত্রণের কোনো সুযোগ নেই। আমরা বার্তা দ্বারা দাম নির্ধারণ করি না. কেউ এ ধরনের কাজ করলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।
দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এই ব্যবস্থাপক বলেন: “এটি বর্ষাকাল এবং এই সময়ে ডিমের চাহিদা বেশি।” অন্যদিকে টানা বৃষ্টিতে অনেকেই খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করতে পারেননি। তবে আগামী দুই মাস শীতকালীন সবজি পাওয়া গেলে ডিমের দাম কমবে।
দেশের বর্তমান দৈনিক চাহিদা সাড়ে ৪ কোটি ডিম হলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন ৪ কোটি ডিম উৎপাদিত হয়। কিন্তু সরকারের মতে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে ডিমের চাহিদা থেকে উৎপাদন তুলনায় ৩০ শতাংশ অবশিষ্ট রয়েছে। সেখানে ডিমের অবশিষ্ট রয়েছে ৫৬৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।২০২২-২৩ অর্থবছরে চাহিদা ছিল ১ হাজার ৮০৬ কোটি ৪৮ লাখ, উৎপাদিত হয়েছে ২ হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৩ লাখ পিস। সে হিসাবে অবশিষ্ট ছিল ৫৩১ কোটি ১৫ লাখ পিস।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হলেও দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম বাড়ছে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের ব্যবস্থা নিলে দাম কমানো সম্ভব। শাক-সবজি, মাছ ও মাংসের দাম বৃদ্ধি ডিমের ওপর প্রভাব ফেলেছে বলেও মনে করেন তারা। মৌসুমের কারণে বর্তমানে ডিমের চাহিদা বেশি। আর মালিকানা পরিবর্তনের কারণে গরম হচ্ছে ডিমের বাজার।ক্ষুদ্র খামারিদের অভিযোগ, দেশের মুরগির বাজারে বড় কিছু কোম্পানির আধিপত্য বেশি। তারা মূলত বাজারের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ডিম বেশি দামে বিক্রি হলেও ন্যায্য দাম পান না ক্ষুদ্র খামারিরা ।