দেশের জনপ্রশাসন ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি ও যুবসমাজকে দ্রুত কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (BASA) আয়োজিত এক সেমিনারে এইচএসসি পাসের পরই বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সেমিনারে বলেন, “এইচএসসি( HSC exam) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিসিএস (BCS)পরীক্ষার ব্যবস্থা করলে মেধাবী তরুণরা কম বয়সে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। এর মাধ্যমে প্রশাসন আরও গতিশীল হবে এবং মেধা ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।”
প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব
সেমিনারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান প্রশাসনে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “দক্ষ প্রশাসনের জন্য প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। সাহসী ও নৈতিক কর্মকর্তার গুরুত্ব অপরিসীম।”
সংস্কারের আহ্বান
১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা এবং অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এ বি এম আব্দুস সাত্তার প্রশাসনে শুদ্ধি অভিযানের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বর্তমান প্রশাসনের দলীয় প্রভাব এবং অনিয়ম দূর করতে অবিলম্বে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে।”
পদোন্নতি ও পদায়ন প্রক্রিয়ার সংস্কার
সাবেক যুগ্ম সচিব হারুনুজ্জামান প্রশাসনে পদোন্নতির জন্য বিশেষ পরীক্ষা চালুর প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, “উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে উপসচিব এবং জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে।”
বিশেষ সুপারিশ
সেমিনারে বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন (এসিআর) প্রক্রিয়ায় সংস্কার এবং নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রক্রিয়ার শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার সুপারিশ উঠে আসে।
রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ। সঞ্চালনা করেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
এইচএসসি পাসের পর বিসিএস পরীক্ষা(exam) নেওয়ার প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একদিকে তরুণদের দ্রুত কর্মসংস্থানের সুযোগ হিসেবে এটি ইতিবাচক মনে হলেও, অন্যদিকে এর প্রভাব এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।