বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব খুবই প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম। বুধবার (২০ নভেম্বর) একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সারজিস আলম এ কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, “বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা দুটি প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ফলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন, গণমানুষের কল্যাণ এবং ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। জনগণের আকাঙ্ক্ষা, চাহিদা ও অধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।”
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, কেউ যদি বিচারের আগে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তাদের প্রতিরোধ করা হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা জীবন দিয়ে হলেও এর বিরোধিতা করব। প্রয়োজনে দ্বিতীয় আরেকটি গণআন্দোলন বা অভ্যুত্থান ঘটানো হবে। কারণ গণতান্ত্রিক চর্চা রক্ষার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ অপরিহার্য।”
সাক্ষাৎকারে সারজিস দেশের আমদানি নির্ভর অর্থনীতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে হলে আমদানি নির্ভরতার পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষিখাতের উন্নয়ন, শিল্পায়নের প্রসার এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেই এটি সম্ভব।”
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, “এই দল হবে তরুণ প্রজন্ম, কৃষক-শ্রমিক, এবং ছাত্রদের সমন্বয়ে একটি গণমুখী শক্তি। যেখানে নীতিনৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধই হবে প্রধান ভিত্তি। দেশকে দুর্নীতি, বৈষম্য এবং ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে মুক্ত করাই হবে এই রাজনৈতিক শক্তির লক্ষ্য।”
বাংলাদেশে নতুন প্রজন্মের জন্য রাজনীতিতে স্থান করে দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে সারজিস আরো বলেন, “যদি তরুণরা সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হতে পারে, তাহলে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন চিন্তা, উদ্ভাবনী উদ্যোগ এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে তরুণদের ভূমিকা অপরিহার্য।”
দেশে গণতন্ত্রের কার্যকর চর্চা এবং জনস্বার্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ছাত্র ও সাধারণ জনগণের ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান তিনি।