বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার বিষয়ে বাংলাদেশ আপত্তি জানিয়েছে এবং নয়াদিল্লিকে তার ‘বানোয়াট’ মন্তব্য করা বন্ধ করতে বলেছে।
জবাবে ভারত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে জানায়, শেখ হাসিনা একজন ব্যক্তি হিসেবে তার বক্তব্য দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, ভারতের অবস্থানের সঙ্গে তার বক্তব্যকে গুলিয়ে ফেললে সম্পর্কের কোনো সুফল হবে না।
গত আগস্টে সহিংস বিক্ষোভে এক হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির পর হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে।
বুধবার এক অনলাইন ভাষণে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ এনে তার সমর্থকদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শেখ হাসিনার ভাষণ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করে। তার বাবা নেতা মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ এর বাড়িতে আগুন ও ভাংচুর করে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় … অনুরোধকৃত। তাঁকে যাতে এই ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও উস্কানিমূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখা যায়, তার জন্য পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার মনোভাব নিয়ে ভারতের অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এর পরিবর্তে ভারত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে সেখানকার কর্তৃপক্ষকে তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে ‘ক্রমাগত নেতিবাচকতার’ জন্য দায়ী বলে অভিযুক্ত করে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভারত পারস্পরিক লাভজনক সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করবে এবং বাংলাদেশ পরিবেশকে কলুষিত না করে একইভাবে প্রতিদান দেবে বলে আশা করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল মুজিবের বাড়ি ধ্বংসের ঘটনাকে ভাঙচুর বলে নিন্দা জানিয়েছেন।

মুজিব ১৯৭১ সালে এই বাড়ি থেকে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন এবং ১৯৭৫ সালে তাকে এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে সেখানে হত্যা করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা ভবনটিকে তার বাবার উত্তরাধিকারের প্রতি নিবেদিত একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং শেখ হাসিনার পরিবার বা তার আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদদের সম্পত্তির ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার যে কোনো অবনতি বিশ্বকে ভুল বার্তা দেবে।
শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৪,০০০ কিলোমিটার (২,৫০০ মাইল) সীমান্ত রয়েছে এবং দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে।