আপনি কি আপনার প্রিয় রঙ দিয়ে আপনার নখ আঁকবেন, কিন্তু এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় না? হাতে লাগানোর পর অল্প সময়ের মধ্যেই উঠে আসছে? কেউ হয়ত এক রঙের নেইলপলিশ পরতে চায়, কেউ হয়ত ভিন্ন রঙের পরতে চায়, কেউ হয়ত তাদের নখে রং করতে চায়। ম্যাট, গ্লসি, শিমার বা ট্রান্সপারেন্ট- সব ধরনের নখের রঙই পছন্দের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আপনার সমস্ত প্রচেষ্টা বৃথা মনে হয় যখন আপনার নেইলপলিশ দীর্ঘ সময় ধরে লাগানোর পরেও দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আপনি যদি এমন সমস্যার সম্মুখীন হন তবে আজকের টিপস আপনার জন্য। আজ আমি আপনাকে 10টি দুর্দান্ত টিপস বলতে যাচ্ছি যা আপনার নেইলপলিশ দীর্ঘস্থায়ী করতে সহায়তা করবে।
নেইল পলিশ কতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়
দীর্ঘায়ু টিপস গুলি জানার আগে, নেলপলিশ কতক্ষণ স্থায়ী হয় সে সম্পর্কে আপনার কিছুটা জানা উচিত। সত্যি বলতে, এটা সত্যিই অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। যেহেতু বিভিন্ন ধরনের নেইলপলিশ রয়েছে, তাই নখের নকশা এবং ম্যানিকিউর সবার জন্য উপযোগী। আপনার নখের ধরণের উপর নির্ভর করে, নেইলপলিশ আপনার নখে বেশ কয়েক দিন ভাল থাকে। আপনি যদি দীর্ঘস্থায়ী ফর্মুলা বা জেল পলিশ ব্যবহার করেন তবে আপনার নেইলপলিশ দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
আপনার নেইলপলিশকে দীর্ঘস্থায়ী করতে 10টি দুর্দান্ত টিপস
আমরা জানি নেলপলিশ কতক্ষণ স্থায়ী হয়। এখন জানা যাক দীর্ঘস্থায়ী ফলাফল অর্জনের জন্য আপনি কী কৌশল ব্যবহার করতে পারেন।
১) একটি পাতলা স্তর প্রয়োগ করুন
দীর্ঘস্থায়ী নেইলপলিশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সাবধানে ব্যবহার। আপনি যদি মনে করেন যে বার্নিশের একটি পুরু স্তর প্রয়োগ করলে স্থায়িত্ব বাড়বে, আপনি ভুল। আপনি যদি একটি পুরু আবরণ প্রয়োগ করেন তবে এটি শুকাতে আরও বেশি সময় লাগবে এবং সহজেই উঠে আসবে। অতএব, সর্বদা একটি পাতলা স্তর ব্যবহার করুন। একাধিক কোট লাগালে নখের রঙ দ্রুত বিবর্ণ হবে।
২) রাইট ওয়েতে অ্যাপ্লাই করুন
নেইল পেইন্ট অ্যাপ্লাইয়ের সময় নখের কোনো অংশ বাদ যাচ্ছে কিনা ভালো করে খেয়াল করুন। কোণার অংশগুলোতে বেশি খেয়াল রাখুন কারণ এসব জায়গা থেকেই নেইল পলিশ উঠে যাওয়া শুরু করে। যদি মনে হয় নখে অ্যাপ্লাই ভালো হয়নি, তবে মুছে আবার নতুন করে অ্যাপ্লাই করুন।
৩) নখ ছোট রাখুন
নেইল কালার বেশি সময় স্টে করাতে চাইলে নখ ছোট রাখতে হবে। লম্বা নখ সহজেই ভেঙে যায়। শর্ট নেইলস মেনটেইন করা সহজ।
৪) প্রতি কোটের মাঝে গ্যাপ দিন
নেইল পেইন্ট করার সময় আমরা দ্রুত ২/৩টি কোট দিয়ে দেই, সাথে ফ্ললেস ফিনিশও চাই। কিন্তু প্রথমবারের ফিনিশিংটা যদি ভালোভাবে না শুকায়, তাহলে কখনোই শেষ ফিনিশিং ভালো হবে না। প্রথম কোটের পর যদি আরও ২/৩টা কোট লাগে তাহলে প্রতিবার কোট দেওয়ার সময় অন্তত দুই মিনিটের একটি গ্যাপ রাখুন। এছাড়া দুই তিনদিন পর পর একবার করে অ্যাপ্লাই করলেও লং লাস্টিং এর সম্ভাবনা বাড়বে।
৫) কাজের সময় নখ ঢেকে রাখুন
আপনাকে যদি রেগুলার ঘরের কাজ করতে হয়, তাহলে নখের সুরক্ষার জন্য অবশ্যই রাবার গ্লভস ব্যবহার করতে হবে। পানির কাজ করার সময় সাবান ব্যবহার করার কারণে নখ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। নেইল পেইন্ট লং লাস্টিং করার জন্য নখ যেন সাফার না করে সেজন্য সবার আগে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
৬) ঠান্ডা বাতাসে নখ শুকিয়ে নিন
নেইল পলিশ কখনো হট এয়ার দিয়ে শুকানো যাবে না। হাতে গরম বাতাস লাগলে দ্রুত শুকাবে এ ধারণা একদম ভুল। হট এয়ার নেইলসকে ভালোভাবে শুকাতে দেয় না। বরং এতে পেইন্ট নখে জমে গিয়ে বাবল তৈরি হতে পারে। এমন হলে নেইল পলিশ উঠে আসে খুব সহজে। এর চেয়ে ঠান্ডা বাতাসে ড্রাই করে নেওয়া ভালো। ফ্যানের বাতাসে অথবা ড্রায়ারের নরমাল এয়ার দিয়েও নেইল পেইন্ট শুকিয়ে নেওয়া যায়।
৭) কিউটিকলস ক্লিন রাখুন
নেইল পলিশ লাগানোর সময় কিউটিকলসে লেগে যেতে পারে। মনে রাখবেন, নখে যেভাবে নেইল পলিশ বসে, স্কিনে কিন্তু সেভাবে বসে না। আর তাই, খুব সহজেই উঠে আসে। তাই কিউটিকলে নেইল পলিশ লেগে গেলে একটি কটন বলে রিমুভার লাগিয়ে সাবধানে উঠিয়ে ফেলতে হবে।
৮) নখ ময়েশ্চারাইজড রাখুন
নেইল পলিশ নিয়মিত লাগাচ্ছেন, কিন্তু নখ ময়েশ্চারাইজড রাখার জন্য কোনোরকম নারিশমেন্ট প্রোভাইড করছেন না তাহলে বেটার রেজাল্ট কীভাবে আসবে বলুন তো? শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো নখকেও আলাদা অ্যাটেনশন দিতে হবে। কারণ নারিশমেন্টের অভাবে নখে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে নেইল পলিশ লং লাস্টিং না হওয়াও একটা। তাই নিয়ম করে কিউটিকল অয়েল বা হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন। হ্যান্ড ক্রিম অনেকটা সানস্ক্রিনের মতো কাজ করে। নখের পোস্ট মেনিকিওর আসলে এটাই। দিনে অন্তত দুইবার হাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে নখ ভালো থাকবে।
৯) নখ কামড়াবেন না
আপনি কি মনের অজান্তেই নখ কামড়াতে থাকেন? এই অভ্যাস কিন্তু মোটেই নখ ভালো রাখে না! নেইল পলিশ লাগানোর পর যদি নখ কামড়ানো হয়, তাহলে নখ ভাঙতে থাকবে, নেইল পলিশ লং লাস্টিংও হবে না।
১০) পানিতে হাত ভেজাবেন না
লং লাস্টিং করতে চাইলে নেইল পলিশ অ্যাপ্লাইয়ের আগে হাত ধোয়া যাবে না। কারণ নখ পানিতে ভিজিয়ে নিলে স্ট্রেচ হয়। আবার শুকিয়ে গেলে সংকুচিত হয়ে যায়। যার কারণে নেইল পলিশ শুষ্ক হয়ে উঠে আসতে থাকে।